মাঝেমধ্যেই খবরের শিরোনামে দেখা যায়, কোনও প্রভাবশালী নেতার বা ধনী ব্যবসায়ীর বাড়িতে হঠাৎ হানা দিয়েছে আয়কর দফতর, সিবিআই কিংবা ইডি। আর তারপর বেরিয়ে আসে কোটি কোটি টাকার নগদ অর্থ! এই দৃশ্য দেখে অনেকেই মনে মনে প্রশ্ন করেন, “তাহলে আমরা নিজের বাড়িতে কত টাকা রাখতে পারি?”
এই প্রশ্নটা যতটা সাধারণ, উত্তরটা কিন্তু ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বহু মানুষেরই ধারণা, নগদ টাকার উপর সরকারের কোনো কড়া নিয়ন্ত্রণ আছে।
তবে বাস্তবটা একটু আলাদা। আয়কর আইনে কোথাও স্পষ্ট করে বলা নেই যে, আপনি বাড়িতে সর্বোচ্চ কত টাকা রাখতে পারবেন। মানে, আপনি ইচ্ছেমতো যত খুশি নগদ টাকা নিজের কাছে রাখতে পারেন। কিন্তু এখানে একটা জিনিস মাথায় রাখা খুব জরুরি, আপনার কাছে থাকা টাকার উৎস যেন বৈধ হয়। মানে, টাকাটা কোথা থেকে আসছে।
সরকারের মূল শর্ত এটাই, টাকা যদি বৈধ পথে উপার্জিত হয় এবং তার হিসেব যদি আপনার আয়কর রিটার্নে স্পষ্টভাবে দেওয়া থাকে, তাহলে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু আপনি যদি আয়ের উৎসের নাম উল্লেখ না করে মোটা অঙ্কের টাকা বাড়িতে রাখেন, তাহলে সেটি "আয় বহির্ভূত" অর্থ বলে ধরা হতে পারে।
আয়কর আইনের ৬৮ থেকে ৬৯বি ধারা অনুযায়ী, যদি কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে এমন টাকা পাওয়া যায় যার উৎস প্রমাণ করতে পারা যাচ্ছে না, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার আপনার মোট আয়ের ৭৮% অবধি জরিমানা করতে পারে। শুধু জরিমানাই নয়, প্রয়োজনে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
তাই ভুল ধারণায় না ভুগে সচেতন থাকুন। নগদ অর্থ যতই রাখুন না কেন, তার উৎস যেন নথিভুক্ত ও স্বচ্ছ হয়। কারণ, আজকালকার দিনে শুধু টাকা থাকা নয়, টাকার হিসেব থাকাটাও দরকারি।
Comments
Post a Comment