যদি বাঁচতে চান তাহলে বিয়ার খাওয়া আজ থেকেই বন্ধ করুন!

বিয়ার অনেকেই খান 'মজা' বা 'রিফ্রেশমেন্ট' হিসেবে। কিন্তু আপনি জানেন কি, এই সামান্য মজাটাই ধীরে ধীরে আপনার জীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে? বিয়ারকে অনেকেই হালকা মদ বলে মনে করেন, কিন্তু এটি শরীরের উপর যতটা ক্ষতি করে, তা অনেক সময় কঠিন মদের চেয়েও বেশি মারাত্মক হতে পারে।

নিয়মিত বিয়ার পান করলে লিভারের ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে। এতে লিভার সিরোসিস, ফ্যাটি লিভার ও লিভার ফেইলিওরের ঝুঁকি বেড়ে যায়। লিভার একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটি পুনরুদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

বিয়ারে রয়েছে উচ্চ ক্যালোরি ও চিনি, যা শরীরে জমে গিয়ে ওজন বাড়িয়ে দেয়।

দীর্ঘদিন বিয়ার খেলে পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যেতে পারে, যা যৌন শক্তি ও মাংসপেশী গঠনের ওপর প্রভাব ফেলে। মহিলাদের ক্ষেত্রেও এটি হরমোনাল ইমব্যালান্স তৈরি করে।

বিয়ার শুধু শারীরিক দিক থেকে ক্ষতি করে না, মানসিক ও সামাজিক জীবনেও এর প্রভাব ভয়াবহ। বিয়ার খাওয়ার ফলে অনেক সময় আচরণগত পরিবর্তন দেখা দেয়, রাগ, হতাশা, অলসতা এবং আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি হয়। পারিবারিক কলহ, বন্ধুদের সঙ্গে দূরত্ব এমনকি কর্মক্ষেত্রে সমস্যাও হতে পারে নিয়মিত বিয়ার সেবনের কারণে।

বিয়ারে থাকা অ্যালকোহল হৃদপিণ্ডের জন্য বিষ। নিয়মিত বিয়ার পান করলে হার্টের পেশী দুর্বল হতে শুরু করে এবং উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। অনেক সময় হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টও হতে পারে।

অনেকেই বলেন, "আমি তো শুধু সপ্তাহে এক-দু’দিন খাই, আসক্ত না।" কিন্তু এখানেই বিপদ। বিয়ার এমনভাবে স্নায়ুতে প্রভাব ফেলে, যা আস্তে আস্তে মস্তিষ্ককে এটি ছাড়া কাজ করতে না পারার অবস্থায় পৌঁছে দেয়। আপনি বুঝতেই পারবেন না, কখন 'অভ্যাস' থেকে এটি 'নেশা'তে পরিণত হলো।

শরীর ও মনের সুস্থতা ফিরে পেতে চান তো পান করুন প্রচুর পরিমান জল, ফলের রস, হারবাল চা। এক্সারসাইজ করুন নিয়মিত, এতে শরীরের টক্সিন বের হবে। যদি বিয়ার ছাড়তে সমস্যা হয়, তবে কাউন্সেলর বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জীবন একটাই, আর সেই জীবন আপনি নিজেই ধ্বংস করছেন প্রতিদিনের বিয়ারের চুমুকে। এখনো সময় আছে, আপনি চাইলে আজ থেকেই এই অভ্যাস বদলাতে পারেন। শুধু নিজের জন্য না, প্রিয়জনদের জন্য!

Comments