আমরা ইন্টারনেট আর চারপাশের মুখে মুখে এমন অনেক "তথ্য" শুনি, যেগুলো এতবার বলা হয়েছে যে ওগুলোকে সত্যি বলেই বিশ্বাস করে ফেলি। কিন্তু বাস্তবে এই ভাইরাল দাবিগুলোর অনেকটাই মিথ্যে বা ভুল।
আজ আমরা জেনে নেব এমন ১৩টি বিস্ময়কর মিথ, যা আপনি এতদিন সত্যি বলে ভেবে এসেছেন!
১. গ্যাস স্টেশনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে বিস্ফোরণ হয়!
বাস্তবতা: এখন পর্যন্ত এধরনের কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে সাবধানতার জন্য নিষেধ করা হয়।
২. চুইংগাম গিলে ফেললে ৭ বছর পেটে থাকে!
বাস্তবতা: চুইংগাম হজম না হলেও শরীর স্বাভাবিকভাবেই এটি কয়েক দিনের মধ্যেই বের করে দেয়।
৩. মানুষ মস্তিষ্কের মাত্র ১০% ব্যবহার করে!
বাস্তবতা: MRI ও নিউরোসায়েন্স প্রমাণ করে, আমরা আমাদের মস্তিষ্কের প্রায় প্রতিটি অংশই বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করি।
৪. বজ্রপাত এক জায়গায় দু’বার হয় না!
বাস্তবতা: নিউ ইয়র্কের এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং-এ বছরে প্রায় ২০-২৫ বার বজ্রপাত হয়!
৫. উটের কুঁজে জল থাকে!
বাস্তবতা: উটের কুঁজে জল থাকে না, কুঁজে থাকে চর্বি, যা শক্তির জন্য সংরক্ষিত।
৬. চিনি খেলে বাচ্চারা চঞ্চল বা হাইপার হয়ে যায়!
বাস্তবতা: বহু গবেষণায় দেখা গেছে, চিনি আর হাইপারঅ্যাকটিভিটির মাঝে কোনও সরাসরি সম্পর্ক নেই।
৭. মোবাইল টাওয়ার এর বিকিরণ থেকে ক্যান্সার হয়!
বাস্তবতা: টাওয়ার থেকে নির্গত বিকিরণ খুবই কম স্তরে থাকে এবং দীর্ঘসময় ঘন সংস্পর্শে না এলে ক্ষতি হয় না। তবে সতর্কতা জরুরি।
৮. মাইক্রোওয়েভের সামনে দাঁড়ালে শরীর খারাপ হয়!
বাস্তবতা: মাইক্রোওয়েভে যে রেডিয়েশন ব্যবহার হয়, তা বাইরে বের হয় না। মেশিনের দরজা ঠিকঠাক থাকলে কোনও ক্ষতি হয় না।
৯. টিভি একেবারে কাছে থেকে দেখলে চোখ খারাপ হয়!
বাস্তবতা: অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম চোখে ক্লান্তি আনতে পারে, কিন্তু টিভির কাছাকাছি বসা মানেই চোখ খারাপ হবে - এটা প্রমাণিত নয়।
১০. মোবাইল চার্জে থাকলে কথা বলা বিপজ্জনক!
বাস্তবতা: যদি আপনি অরিজিনাল চার্জার ব্যবহার করেন, এবং মোবাইলে কোনও যান্ত্রিক সমস্যা না থাকে, তাহলে চার্জে থাকলেও কথা বলা পুরোপুরি নিরাপদ।
১১. টয়লেট সিট থেকে রোগ ছড়ায়!
বাস্তবতা: টয়লেট সিট থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা খুবই কম। সংক্রমণ ছড়ায় মূলত হাতের মাধ্যমে, তাই হাত ধোয়া বেশি জরুরি।
১২. গাজর খেলে চোখের দৃষ্টি বাড়ে!
বাস্তবতা: গাজরে ভিটামিন-এ আছে, যা চোখের জন্য ভালো, কিন্তু এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় না, শুধু ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে।
১৩. নারকেল তেল চুল বাড়িয়ে তোলে!
বাস্তবতা: নারকেল তেল চুলকে মসৃণ ও পুষ্টি দিতে পারে, কিন্তু নতুন চুল গজানো বা হেয়ার গ্রোথ বাড়ানো - এসবের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
শেষ কথা
ইন্টারনেট ও মুখে মুখে ছড়ানো গল্পের সবকিছুই বিশ্বাসযোগ্য নয়। কিছু তথ্য এতটাই জনপ্রিয় হয়ে যায় যে আমরা সেগুলো যাচাই না করেই মেনে নিই।
আজকের এই পোস্ট যদি আপনার কিছু ভুল ধারণা ভেঙে দিয়ে থাকে, তবে বন্ধুদের সঙ্গেও শেয়ার করুন। আপনি এর মধ্যে কোন মিথটি আগে সত্যি ভেবেছিলেন? নিচে কমেন্টে জানান!
Comments
Post a Comment